পৃষ্ঠাসমূহ

শনিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

উদাস বসন্ত দুপুর ও একটি রোমাঞ্চকর সেমি-আ্যাডভেঞ্চার

পূর্বপরিকল্পনা ছাড়া আজকে খুব ভালো একটা পিকনিক হয়ে গেল জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যানে (বোটানিক্যাল গার্ডেন)। চিড়িয়াখানা নাকি বোটানিক্যাল করতে করতে মিরপুর-১ থেকে ৬ মানব-মানবীর বাসে উঠা। বামদিকে গেলে চিড়িয়াখানা ডানদিকে বোটানিক্যাল এমন ক্রান্তি লগ্নে এসে ত্বরিত সিদ্ধান্ত আসলো বোটানিক্যাল গার্ডেন। অবশেষে ১০ টাকার বিনময়ে টিকিট নিয়ে উদ্ভিদ সংরক্ষণ, গবেষক ও শিক্ষার্থীদের উদ্ভিদ বিজ্ঞানের গবেষণা কাজের জন্য প্রতিষ্ঠিত ‘বোটানিক্যাল গার্ডেন’ নামক ২০৮ একর জায়গার এক বাগানে প্রবেশ। 

প্রবেশ করেই বুঝতে পারলাম আমাদের মত কেউ ঢাকা শহরে সবুজের স্বাদ পেতে বা বৃক্ষ চিনতে এখানে আসেনি। সবাই আসছে তার বিপরীত লিঙ্গের প্রিয়(!) মানুষটিকে নিয়ে একান্ত সময় কাটাতে। যাই হোক, আমরা বিশেষভাবে আমি আর আজিজ কপোত-কপোতীদের জড়াজড়ি এড়িয়ে বিভিন্ন প্রকার গাছের সাথে পরিচিত হতে থাকলাম। 


ক্যাকটাস হাউস, অর্কিড হাউস বা গোলাপ বাগানের সিকিউরিটি দেখে আমার সন্দেহ হয়েছিল এগুলো আসলেই উপভোগের জন্য রাখা হয়েছে? প্রয়োজন অনুসারে গাছে পরিচিতি দেওয়া নাই। পাতাবিহীন  শুধু ফুল, ফুলগুলো অনেকটা অড়বড়ই গাছে যেভাবে অড়বড়ই ঝুলে থাকে তেমনভাবে ঝুলে আছে সারা বাগান ঘুরেও এই গাছটির নাম খুজে পেলাম না। পদ্ম পুকুর, শাপলা পুকুর দেখে হতাশ, শাপলা পদ্ম তো দূরের কথা পানিই নেই। অবশ্য নির্দেশনা প্লেটে লেখা ছিল এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শাপলা পদ্ম দেখা যাবে। 

ওয়াচ টাওয়ার থাকলেও উঠার সিঁড়ির মুখে কাঁটা দিয়ে ঘেরাও করা।


সিঁড়ি ছাড়া ঢাল বেয়ে উপরে উঠে কৃত্তিম ঝরনার উৎপত্তিস্থান দেখা, ফেলনা তাশ সংগ্রহ সত্যি রোমাঞ্চকর, তবে সবাই পায় নাই শুধু আমি আর আজিজ। ৬০ হাজার ছোট বড় বিভিন্ন প্রজাতির গাছের এই বাগানের যথেষ্ঠ পরিচর্যার অভাব দেখে ইচ্ছে হচ্ছিলো “বন কর্মকর্তার কার্যালয়” নামক সাইনবোর্ড  পরিবর্তন করে আগে ‘অলস’ লাগিয়ে দেই। 


লেকের মাঝখানের কৃত্তিম দ্বীপ আর ওয়াচ টাওয়ার ছাড়া প্রায় সবই দেখা হয়েছে। গাবট (গাব+বট ‘সুকুমার স্টাইল’) গাছে উঠে ছবি তোলা, সবুজ মাঠে পাতা বিহীন ছোট একটা কান্ডে একটা ছোট লতানো ফুল, কোকিল দোয়েলের মিষ্টি সুরের ডাক সত্যিই মনমুগ্ধকর।


বসন্তের পাতা ঝরার শব্দ বা ঝরে পরা পাতার সাথে পায়ের ঘর্ষনে সৃষ্ট গান এখনও কানে বাজে। এ সুর অনেকদিন মনে রয়ে যাবে মনে হচ্ছে...


আবু হাসানাত দিপু
১৪ ফেব্রুয়ারী ২০১৪

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন