পৃষ্ঠাসমূহ

বুধবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

ক্রিকেট ও আমি......!!!


একটা সময় ছিল যখন ক্রিকেট খেলা হলেই আমাকে দেখতে হবে তা যেকোনো দলেরই হোক না কেন। ক্রিকেটের সব ধরনের সকল দেশের খেলার খোঁজ-খবর আমার কাছে থাকতো। আমার কিছু ডায়রি ছিল যেখানে খেলোয়ারদের বিভিন্ন তথ্য ও রান বা উইকেট সংখ্যা লিখে রাখতাম।
ক্রিকেট বুঝার পর থেকেই আমি মোটামুটি পাকিস্তানের বিপক্ষে। সেটা শুরু হয়েছিল ইন্দিয়া-পাকিস্তান খেলার পর থেকে কারণ আমি সাপোর্ট করতাম ইন্ডিয়াকে। ক্লাস সেভেন- এইটে পড়ার সময় ইন্ডিয়া-পাকিস্তান খেলা নিয়ে ক্লাস দুই ভাগ হয়ে যেতো। কে ভাল কে মন্দ তা নিয়ে চলত তুমল বিতর্ক। তখন আমার সবসময় পাকিস্তান কে শত্রু মনে হতো(এখনও হয়)। যার সাথেই পাকিস্তানের খেলা হতো আমার কামনা থাকতো পাকিস্তান যেন হেরে যায়।
গত ৩-৪ বছর বাংলাদেশ ছাড়া অন্য কোন দেশের খেলা দেখা হয় না এমনকি খোঁজ-খবরও তেমন একটা রাখা হয় না। ইদানীং বাংলাদেশের খেলাও দেখা হয় না তবে মোবাইলে নেটের কল্যাণে খোঁজ-খবর রাখা হয়।
বর্তমানে আমার মধ্যে আরেকটা পরিবর্তন আসছে তা হল ইন্ডিয়া হেরে গেলেও এখন আমার কেমন যেন একটা পৈশাচিক আনন্দ হয়। এখন  আমার কামনায় থাকে ইন্ডিয়াও যেন হেরে যায়। ইন্ডিয়া-পাকিস্তান বা অন্য প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেট দলের চেয়ে দ্বিতীয় শ্রেণীর দল আয়ারল্যান্ড বা আফগানিস্তানের জয় দেখলে ভাল লাগে।
এখন খেলা না দেখলেও বাংলাদেশের জয়ের কামনা সবসময়ই করতে থাকি। বাংলাদেশ ছাড়া অন্য কোন দেশের জয়ের খবর শুনতে ভাল লাগে না......।।
এখন যা বুঝতে পারছি বাংলাদেশের ক্রিকেট ভালো নেই। সেটা প্রশাসন বা খেলোয়ার সবাই একই অবস্থানে আছে। নানা অরাজকতা ও দুর্নীতি ক্রিকেটে ঢুকে যাচ্ছে। বাংলাদেশের ক্রিকেটের সুদিনের অপেক্ষায় আছি। ১৬ কোটি বাঙালি ক্রিকেটকে যেভাবে ভালোবাসে আমাদের ১১ জন খেলোয়ার বা ১১ জন প্রশাসনিক কর্মকর্তা ঠিক সেভাবেই ভালবাসবে সেই অপেক্ষায় আছি.........!

শুক্রবার, ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

পিকনিক ও আমি.........

পিকনিকে কুইজ বা কূপন আয়োজনের দায়িত্ব স্বেচ্ছায় গ্রহণ করার পর ফান্ড পেলাম মাত্র ২৫০ টাকা। তাও আবার অনেকটা জোর করে পিকনিকের নির্ধারিত টাকা থেকে ১৫০ টাকা কম দিয়ে আর নাসিমকে বলার পর ও দিল ১০০ টাকা। যাই হোক এইটুকু সম্বল করে বুধবার বিকালে গিফট হিসেবে টয়লেট সামগ্রী নিয়ে আসলাম  । এসেই তাড়াতাড়ি কুইজের জন্য প্রশ্ন করে প্রিন্ট, ফটোকপি করলাম তারপর কূপন বানানো, গিফট র‌্যপিং যখন শেষ হল তখন ঘড়িতে দেখলাম সময় রাত ১ টা। সকাল ৭:৩০ মিনিটে মিরপুর থাকতে হবে উঠতে পারবো তো? এই আশঙ্কা থেকে নিজের উপর দুইবার পানি থেরাপি প্রয়োগ করলাম। 

বৃহস্পতিবার সকালে অবশ্য ঠিক সময়মতোই বাসা থেকে বের হলাম কিন্ত যানজটের কারনে কাঙ্খিত সময়অনুসারে পৌছতে পারলাম না। গাড়ি ছাঁড়ার কথা ছিল ৮ টায় কিন্তু ছাড়ল ৯:৩০ টায়। যাত্রী সংখ্যা ২২ যেখানে বাসের সিট সংখ্যা ৪৭।
বাস ছাড়ার পর থেকেই শুরু হল গান। বলতে গেলে মিশুই পুরো বাসটা মাতিয়ে রেখেছে লালন, মাতাল রাজ্জাক বা শাহ আব্দুল করিমের গান গেয়ে সাথে ছিল হাসান, আর আজিজ তার হেঁড়ে গলা নিয়ে সবার সাথেই দোহার ধরছিল। লোক গান যে পিকনিকেও গাওয়া যাই গতকালই আমি প্রথম দেখলাম।


আনন্দের মধ্য দিয়ে ২ ঘণ্টা পার করে ১১:৩০ এর দিকে আমরা নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ উপজেলার পেরাবো নামক গ্রামে অবস্থিত “বাংলার তাজমহলে” পৌঁছে গেলাম। ৫০ টাকায় টিকেট কেটে প্রবেশ করলাম কিন্তু আশানুরূপ কিছু পেলাম না। তারপর বাংলার তাজমহল থেকে বের হয়ে আসলাম পানাম নগরীতে। বিনা টাকায় পানাম নগরী ভ্রমন করে আমার ৫০ টাকার বাংলার তাজমহল ভ্রমনের কিছুটা শোধ তুললাম। পানাম নগরের প্রাচীন বাসিন্দাদের কথা চিন্তা করতে করতে লাঞ্চ ওখানেই করে নিলাম। লিচু গাছে উঠে খাওয়া পরবর্তী বিশ্রাম নিয়ে কারুশিল্প জাদুঘরের উদ্দেশ্যে রওনা হলাম। সেখানে গিয়ে পেয়ে গেলাম লোক কারুশিল্প মেলা ও লোকজ উত্সব-১৪২০ এর। জাদুঘরে আমাদের আদি বাসিন্দাদের ব্যবহৃত জিনিসপত্র ও মেলায় ঘুরতে ঘুরতেই মসজিদ থেকে ভেসে আসলো মাগরিবের আযানের ধ্বনি।

এর মধ্যে সর্দার বাড়ির পুকুরের পাশের মাঠে বসে সবাই দিয়ে দিল বিশেষ কুইজ পরীক্ষা। খাতা মূল্যয়ন শেষে ভ্রমনের ইতি টেনে আমরা ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হলাম। বাসে উঠে কুইজ বিজয়ীদের নাম ঘোষণা ও অদ্ভুত সব উপহারের মোড়ক খোলার মধ্য দিয়ে কিছু সময় পার করে শুরু হল কূপন পর্ব। কূপন পর্বে সিয়াম ভাই স্পন্সর হয়ে ১ জনকে উপহারের ঘোষণা দিল। সবাই নিজেই কূপন তুলে গাই-গুই করতে করতে যার কূপনে যা লেখা ছিল তা করতে থাকল। যেহেতু উপহার আছে তাই সবার মতামত নিয়ে নম্বার প্রদান চলতে থাকলো। ভেবেছিলাম মাহবুব তার ভাগ্যে পরা “প্রথম প্রেমের কাহিনী” শোনাতে পারবে না, কিংবা মুজাহিদ ভাই অফ মুডের মানুষ (আমার মনে হয়) তার অভিজ্ঞতা(দুর্লভ) বর্ণনা করতে পারবে না কিন্তু আমাকে অবাক করে দিয়ে তারাই সর্বোচ্চ নাম্বার অর্জনকারীদের দলে চলে আসলো। সবচেয়ে অবাক করা দৃশ্য আমার কাছে মনে হয়েছে আরজুর নাচ  ।
বাংলায় একটা প্রবাদ আছে “গর্ত পরের জন্য খুড়লে নিজেকে সেই গর্তে পরতে হয়” আমাকে সেই গর্তে পড়তে হয়েছে যখন আমার কূপন তোলার পালা আসলো। প্রথম থেকে আমি “প্রেমের প্রস্তাব” নামক কূপনটির অপেক্ষায় ছিলাম। এটা কার ভাগ্যে আসে আর সে কিভাবে পাড় পায়। একে একে সবারটা শেষ হয়ে গেল কিন্তু কেউ পেল না। বাকি থাকলো ৩ টা কূপন, ‘প্রেমের প্রস্তাব’, ‘নাচ’, ‘খালি’। কূপনের টুপি তখন ছিল সিয়ামের হাতে। আজিজ যখন তার ভাগ্যে পরা কৌতুক শোনাচ্ছিল তখন আমি সিয়ামের চোখ ফাঁকি দিয়ে সব কূপন চেক করে ‘খালি’ টা উপরে রাখলাম  (ভুল ছিল কেন যে ‘প্রেমের প্রস্তাব’ টা হাওয়া করে দিলাম না)। ভেবেছিলাম “খালি” উঠলে তো বেঁচেই গেলাম বা ‘নাচ’ উঠলে হাত পা ছুড়াছুড়ি করে পার পেয়ে যাব  । কিন্ত উঠানোর সময় সিয়াম হাত দিয়ে ডেকে দিল। আমি আর চোখে দেখে কূপন তোলতে পারলাম না, তারপর যা হওয়ার তাই হল  নাসিমকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়েই জড়িয়ে ধরলাম । এভাবেই শেষ হল সকল আনন্দ। 


 সারাদিন ভ্রমনের ফাঁকে ফাঁকে সবাই আসিফ ভাইয়ের/আজিজের/তন্নির ক্যামেরায় বা অন্যদের ক্যামেরায়ুক্ত মোবাইলে সব্বাই বন্দী হচ্ছিলো। বাকি সময় যার যার মত উপভোগ।
প্রথম থেকেই আমার বিশ্বাস হচ্ছিল না যে নাসিম ও তানভীর ভাই ট্যুরটা আয়োজন করতে পারবে। একটা তারিখ পার হওয়ার পর তো ট্যুরের আশাই আমি ছেড়ে দিয়েছিলাম। অবশেষে তারা সফল। তাদের ছোট করে হলেও ধন্যবাদ দিচ্ছি  । মামুনকে বিশেষ ধন্যবাদ ই সি ই ডিপার্টমেন্টের হয়েও আমাদের ডাকে সাড়া দেওয়ার জন্য। বাকি সবাইকেও ধন্যবাদ দিচ্ছি কারণ তারা না হলে ট্যুরটা সম্ভব হত না, হতো না এত আনন্দ। 


ঢাকার এত কাছে বা আমার বাড়ির (নরসিংদী) পাশে এত চমৎকার একটা জায়গা অথচ আমার ভ্রমন করা হয়নি ভাবতেই অবাক লাগে। হাঁ এটাই সত্য বাড়ির পাশের পড়শীর খোঁজ খবর কেউ রাখে না......। তাইতো লালন বলে গেছেন “বাড়ির পাশে আরশি নগর সেথা এক পড়শী বসত করে আমি একদিনও না দেখিলাম তারে...............।“ 

শনিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

উদাস বসন্ত দুপুর ও একটি রোমাঞ্চকর সেমি-আ্যাডভেঞ্চার

পূর্বপরিকল্পনা ছাড়া আজকে খুব ভালো একটা পিকনিক হয়ে গেল জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যানে (বোটানিক্যাল গার্ডেন)। চিড়িয়াখানা নাকি বোটানিক্যাল করতে করতে মিরপুর-১ থেকে ৬ মানব-মানবীর বাসে উঠা। বামদিকে গেলে চিড়িয়াখানা ডানদিকে বোটানিক্যাল এমন ক্রান্তি লগ্নে এসে ত্বরিত সিদ্ধান্ত আসলো বোটানিক্যাল গার্ডেন। অবশেষে ১০ টাকার বিনময়ে টিকিট নিয়ে উদ্ভিদ সংরক্ষণ, গবেষক ও শিক্ষার্থীদের উদ্ভিদ বিজ্ঞানের গবেষণা কাজের জন্য প্রতিষ্ঠিত ‘বোটানিক্যাল গার্ডেন’ নামক ২০৮ একর জায়গার এক বাগানে প্রবেশ। 

প্রবেশ করেই বুঝতে পারলাম আমাদের মত কেউ ঢাকা শহরে সবুজের স্বাদ পেতে বা বৃক্ষ চিনতে এখানে আসেনি। সবাই আসছে তার বিপরীত লিঙ্গের প্রিয়(!) মানুষটিকে নিয়ে একান্ত সময় কাটাতে। যাই হোক, আমরা বিশেষভাবে আমি আর আজিজ কপোত-কপোতীদের জড়াজড়ি এড়িয়ে বিভিন্ন প্রকার গাছের সাথে পরিচিত হতে থাকলাম। 


ক্যাকটাস হাউস, অর্কিড হাউস বা গোলাপ বাগানের সিকিউরিটি দেখে আমার সন্দেহ হয়েছিল এগুলো আসলেই উপভোগের জন্য রাখা হয়েছে? প্রয়োজন অনুসারে গাছে পরিচিতি দেওয়া নাই। পাতাবিহীন  শুধু ফুল, ফুলগুলো অনেকটা অড়বড়ই গাছে যেভাবে অড়বড়ই ঝুলে থাকে তেমনভাবে ঝুলে আছে সারা বাগান ঘুরেও এই গাছটির নাম খুজে পেলাম না। পদ্ম পুকুর, শাপলা পুকুর দেখে হতাশ, শাপলা পদ্ম তো দূরের কথা পানিই নেই। অবশ্য নির্দেশনা প্লেটে লেখা ছিল এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শাপলা পদ্ম দেখা যাবে। 

ওয়াচ টাওয়ার থাকলেও উঠার সিঁড়ির মুখে কাঁটা দিয়ে ঘেরাও করা।


সিঁড়ি ছাড়া ঢাল বেয়ে উপরে উঠে কৃত্তিম ঝরনার উৎপত্তিস্থান দেখা, ফেলনা তাশ সংগ্রহ সত্যি রোমাঞ্চকর, তবে সবাই পায় নাই শুধু আমি আর আজিজ। ৬০ হাজার ছোট বড় বিভিন্ন প্রজাতির গাছের এই বাগানের যথেষ্ঠ পরিচর্যার অভাব দেখে ইচ্ছে হচ্ছিলো “বন কর্মকর্তার কার্যালয়” নামক সাইনবোর্ড  পরিবর্তন করে আগে ‘অলস’ লাগিয়ে দেই। 


লেকের মাঝখানের কৃত্তিম দ্বীপ আর ওয়াচ টাওয়ার ছাড়া প্রায় সবই দেখা হয়েছে। গাবট (গাব+বট ‘সুকুমার স্টাইল’) গাছে উঠে ছবি তোলা, সবুজ মাঠে পাতা বিহীন ছোট একটা কান্ডে একটা ছোট লতানো ফুল, কোকিল দোয়েলের মিষ্টি সুরের ডাক সত্যিই মনমুগ্ধকর।


বসন্তের পাতা ঝরার শব্দ বা ঝরে পরা পাতার সাথে পায়ের ঘর্ষনে সৃষ্ট গান এখনও কানে বাজে। এ সুর অনেকদিন মনে রয়ে যাবে মনে হচ্ছে...


আবু হাসানাত দিপু
১৪ ফেব্রুয়ারী ২০১৪

শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

কিছু কথা~ ৭

১। ময়দা আর নারী একে অপরের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত। ময়দা ছাড়া নব্য প্রেমিক ললনা কল্পনা করা যায় না। আর দিনটি যদি হয় ভালবাসা দিবসের মত দিন তাহলে তো কথাই নেই। অবশ্য এক্ষেত্রে ময়দা মাখানোর কেন্দ্রগুলোর চমৎকার ব্যবসা হয়...।

২। ৩০ টাকা পকেটে নিয়ে বই মেলার উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হলাম। ৫ টাকা বাস ভাড়া দিলাম বাকি থাকল ২৫। সারাদিন ব্যাপী পরিকল্পনা করছি বই মেলা থেকে ঘুরে এসে চারুকলায় জলের গান‬ শুনবো। বাস থেকে শাহবাগ নেমে চারুকলা আসতে না আসতে সারাদিনের পরিকল্পনা শেষ। এবারের মেলায় একদিনও খালি হাতে ফিরি নাই আজকে ফিরতে হবে, তাছাড়া ভালবাসারত কপোত-কপোতিদের জ্বালায় বই দেখতে পারব না এই চিন্তা করে জলের গান উপভোগ করে বাসার পথ ধরলাম।

৩। রাস্তায় যার দিকে তাকাই তার হাতেই ‪‎ডিএসএলআর‬ । মানুষের চেয়ে ক্যামেরার সংখ্যা বেশী। বলি ডিএসএলআর কি এতই সস্তা হয়ে গেছে...???

৪। যে সিরিজ জিততে পারতাম ২-০ তে তা হারলাম ২-০ তে। আর কতদিন আমাদের এই আক্ষেপের হার হারতে হবে...???

৫। কালকে কিন্ত চুইংগাম দিবস। প্রেমিকাকে আবার চুইংগাম গিফট করতে যাইয়েন না। বলবেন আমি নিজেই চুইংগাম হয়ে যাব, আর তুমি ইচ্ছেমত আমাকে চর্বণ করবে। এভাবেই সকল ছেলেরা চর্বিত হতে হতে নিজেদের প্রেমিক হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করবে...।

বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

ভালবাসা কথন...

১। ভালবাসা, বসন্ত, চুমাচুমি সব দিবস একসাথে...।। ভালই হল নব্য প্রেমিকদের এক বাজেটে ৩ দিবস পালিত হয়ে যাবে। আগামী দুইদিন দেশে চাল-ডালের অভাব হলেও ভালবাসা বিনিময়ের অভাব দেখা যাবে না। ঝোপে-ঝাড়ে, গাছের চিপায়, রিকশায়, প্রাইভেট কারে, হোস্টেল মেসে, লিটনের ফ্ল্যাটে সব জায়গায় দেখা যাবে ভালবাসার নিরলস বিনিময়। এত ভালবাসা বিনিময়ের পরও কেউ হতে পারবে না সম্রাট শাহজাহান বা কোন এক নিভৃতিচারী প্রকৃতি প্রেমিক। তবু আমরা পালন করে যাব এই সব বানোয়াট- অপ্রয়োজনিয়-উদ্দেশ্যপ্রণোদিত দিবস।

২। ভালবাসা দিবসের সব টিভি অনুষ্ঠানে তাহসানের প্রাধান্য। বুঝলাম না তাহসান কেন আমাদের জাতীয় প্রেমিক হবে। এটা নিশ্চিত বিরোধী দলের চক্রান্ত, নাহলে আরেফিন রুমি যেখানে ভালবাসার জন্য বার বার জেলে যায়, এরশাদ কাকু যেখানে ৯০ এ পা দিয়েও নতুন প্রেমিকা খুজে বেড়ায় সেখানে তাহসান কিভাবে জাতীয় প্রেমিক হয়...??? 

সোমবার, ৩ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

বইমেলা কথন.....

১। বাংলা একাডেমির গেটের পাশে ফুটপাথে এক বাবা ও তার ৮-৯ বছরের ছেলে বাচ্চাদের বই বিক্রি করছে। ছেলেটা ফোরে পড়ে। আর দশটা শিশুর মতোই চঞ্চল। তবে ব্যবসাটা মনে হয় ভালই বুঝে। প্রতিটা বইয়ের দাম দশ টাকা। ৬ টা বই যেখানে তার বাবা ৫০ টাকায় দিচ্ছে না সে তার সাথে আরেকটা যোগ করে ৬০ টাকায় দিয়ে দিচ্ছে। তার বাবা যেখানে ক্রেতার চাহিদা মত বই খুজে দিতে পারে না সে তা নিমিষেই খুজে দেয়, তারপর তার বাবাকে বলতে থাকে ‘আব্বা না কিচ্ছু বুঝে না......’।
২। ১২-১৩ বছরের এক মেয়ে সাথে ৯-১০ বছরের আরেকজন সম্ভবত ছোট বোন এক স্টলে এসে হাসির বই চাইল। কিন্ত কেও তাকে হাসির বই কোনটা তা বলতে পারলো না। শেষে বলল এই সারিতে সবই নাকি হাসির বই......।
৩। এক বিক্রেতা বাবার সাথে আসা ছোট বাচ্ছাকে বলতেছে তোমার কি বই পছন্দ? ভূতের বই? এই দেখ এটা ভূতের বই। এটা পড়লে তুমি ভূতদের কথা জানতে পারবা। আম গাছের ভূত কি করে, কি খায়, কোথায় ঘুমায়, আরও অনেক কিছু......।
৪। ‘বিশ্বসাহিত্য ভবন’ প্রকাশনীর বাবুল সিরাজীর উপন্যাস ‘উতল হাওয়ায়’ কিনতে গেলাম যেটা আমার লিস্টে ছিল তাই আর কিছু না দেখে নিজেই টেবিল থেকে খুজে বললাম এটা দেন। দিল, তারপর বলল লেখক কে চিনি কিনা? বইটা কেন কিনলাম? আমি বললাম আমি এটার রিভিও পড়েছি, ভালো লাগছে তাই কিনলাম...। ও, ঠিক আছে উনার জবাব। মেলা থেকে বাইরে এসে বইয়ের পেছনে লেখকের ছবি দেখলাম, বিক্রেতা আর লেখক একই ব্যক্তি......

৫। অবশেষে পকেট ফাঁকা করে অনেক বই কিনলাম। তবে নিজের জন্য একটাও কিনিনাই সবই প্রিয়জনকে দেওয়ার জন্য.........বইয়ের ঝোঁলা নিয়ে হাঁটতে পারছিলাম না তবুও হাঁটলাম বাংলা একাডেমি থেকে কলাবাগান...।