পৃষ্ঠাসমূহ

বুধবার, ২২ অক্টোবর, ২০১৪

নিভৃতচারীকে স্মরণ...

লেখার মাধ্যমে প্রকৃতির গভীরতা এতো সুন্দর ভাবে বোঝানো যায়, প্রকৃতির এতো গভীরে চলে যাওয়া যায় জীবনান্দের কবিতা পড়ার আগে তা আমার জানা ছিল না।

নিভৃতচারীর বিদায় দিনে নিভৃতচারী পাঠকের পক্ষ থেকে স্মরণ......


যখন মৃত্যুর ঘুমে শুয়ে রবো — অন্ধকারে নক্ষত্রের নিচে
কাঁঠাল গাছের তলে হয়তো বা ধলেশ্বরী চিলাইয়ের পাশে –
দিনমানে কোনো মুখ হয়তো সে শ্মশানের কাছে নাহি আসে –
তবুও কাঁঠাল জাম বাংলার- তাহাদের ছায়া যে পড়িছে
আমার বুকের পরে — আমার মুখের পরে নীরবে ঝরিছে
খয়েরী অশথপাতাত — বইচি, শেয়ালকাঁটা আমার এ দেহ ভালোবাসে,
নিবিড় হয়েছে তাই আমার চিতার ছাইয়ে — বাংলার ঘাসে
গভীর ঘাসের গুচ্ছে রয়েছি ঘুমায়ে আমি, — নক্ষত্র নড়িছে

আকাশের থেকে দূর-আরো দূর-আরো দূর-নির্জন আকাশে
বাংলার-তারপর অকারণ ঘুমে আমি পড়ে যাই ঢুলে।
আবার যখন জাগি, আমা শ্মশানচিতা বাংলার ঘাসে
ভরে আছে, চেয়ে দেখি,-বাসকের গন্ধ পাই-আনারস ফুলে
ভোমরা উড়িছে,শুনি-গুবরে পোকার ক্ষীণ গুমরানি ভাসিছে বাতাসে
রোদের দুপুর ভরে-শুনি আমি; ইহারা আমার ভালোবাসে-

_________জীবনানন্দ দাশ (যখন মৃত্যুর ঘুমে শুয়ে রবো)

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন